জরুরি তথ্যঃ
১। সাজেকে রবি আর টেলিটক ছাড়া কারো কোন নেট ওয়ার্ক নেই।
২। সাজেকে যেতে হলে খাগড়াছড়ি থেকে পুরো ট্যুর এর জন্য গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে যেতে হবে। কোন লোকাল ট্রান্সপোর্ট নেই।
বাংলাদেশের যে কয়েকটি জায়গা টুরিস্ট প্লেস হিসেবে খুব খ্যাতি পাচ্ছিলো সাজেক তার মধ্যে অন্যতম। সাজেক যাওয়ার জন্য অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিল, কিন্তু একা একা যেতে ইচ্ছে করছিলো না। অপেক্ষা করছিলাম কখন আফরিন আর সিনান আসবে, ওদেরকে নিয়ে যাব।
আফরিন আর সিনান বাংলাদেশের আসার পর সাজেক যাওয়ার প্লান করলাম। বেশ কয়েকটা youtube ভিডিও দেখে মেঘপঞ্জি আর মেঘছুট রিসোর্ট কে শর্টলিস্ট করলাম থাকার জন্য। মেঘপুঞ্জিতে থাকার ইচ্ছা ছিল কিন্তু মেঘপঞ্জি জানুয়ারির পর্যন্ত ফাঁকা ছিল না। অতপর মেঘছুট রিসোর্টে দুদিনের থাকার ব্যবস্থা করে ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাসের টিকেট কেটে ফেললাম।
কিন্তু বুঝতে পারছিলাম না খাগড়াছড়ি থেকে কিভাবে সাজেক যাবো। কোথাও পরিস্কার করে কিছু বলা নাই। আমরা মাত্র তিন জন। এখন এই তিন জন কি পুরো গাড়ি ভাড়া করবো না শেয়ার এ যাবার ব্যবস্থা আছে, বুঝতে পারছিলাম না। মেঘছুট রিসোর্টে ফোন দেয়ার পর ওনারা জানালেন, খাগড়াছড়ি নেমে সিএনজি নিয়ে সাজেক এ আসতে পারবো। ব্যপারটা কিছু অদ্ভুদ শোনালেও এছাড়া আর কোন তথ্য ছিলো না আমাদের কাছে ।
যাই হোক, ঢাকা থেকে গ্রীন লাইন বাসে করে রওনা দিয়ে ভোর ৬ টার দিকে সাজেক পৌছালাম। বাস থেকে নেমে কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলাম সাজেক যাবার ব্যবস্থা কি? উনি এক সিএনজি চালকের সাথে আলাপ করিয়ে দিলেন। এরপর জানলাম, সাজেক যেতে হলে খাগড়াছড়ি থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে যেতে হবে। যে গাড়িতে যাবেন, সেই গাড়িই আপনাকে ফেরত নিয়ে আসবে। রিজার্ভ না করলে, আসার সময় গাড়ি পাবার কোন নিশ্চয়তা নেই।
দুই রাত আর তিন দিনের জন্য সিএনজি ভাড়া করতে আমাদের ৭ হাজার টাকা লাগলো। চাদের গাড়ি ১২ থেকে ১৪ হাজারের মত লাগে। সিএনজি ভাড়া করে আমরা আসলাম নাস্তা করতে। সিএনজি চালক জানালেন সাজেক যাবার জন্য সকাল ১০ টায় আমাদের দীঘিনালাতে গিয়ে সিরিয়াল নিতে হবে। এরপর আর্মির গাড়ি সব টুরিস্টদের একসাথে করে কর্ডন করে নিয়ে যাবে, যাতে কোন ঝামেলা না হয়।
আমাদের হাতে প্রায় দুই ঘন্টা সময়। ঠিক করলাম রিছং ঝর্না দেখতে যাবো। নাস্তা শেষে রওনা দিলাম। রিছং ঝর্না যাবার পথে আলুটিলা পড়লো। আমরা এর আগে একবার এসেছিলাম এবং সময় সল্পতার জন্য এবার আর আলু টিলায় নামিনি। আমরা ঝর্নার পথে চলতে লাগলাম। প্রায় ৪০-৫০ মিনিট যাবার পর আমরা কাছাকাছি আসলাম। আমাদের দুই ধরনের টিকেট কাটতে হলো। আমাদের জন্য একটা আর সিএনজি এর জন্য আরেকটা। ঝর্নার প্রায় এক কিলোমিটার আগেই সিএনজি আমাদের নামিয়ে দিলো। সিএনজি চালক জানালেন সামনের পথ ভালো না। আমাদের যেতে হলে হেটে যেতে হবে। আমরা ঠিক করলাম না গিয়ে ড্রোন পাঠিয়ে দেই। যা ভাবা তাই কাজ। ড্রোন পাঠিয়ে ঝরনার কিছু ছবি আর ভিডিও তুলে আনলাম।