রাতেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠব আর কুয়াশার ছবি তুলব। সকালেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে দেখি আম্মা, দুই খালা আর ফুফু গল্প করছিল। তাদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে, ক্যামেরা নিয়ে বের হলাম। আব্বা আর ফুফাতো ভাইও সাথে আসলো। বেশ কিছু ছবি তুললাম।
আগেই বলা ছিল যে আমার জন্য গাছ থেকে খেজুর রস পেড়ে আনতে হবে। আমার ফুফাতো ভাই শুধু এর জন্যই একদিন আগে ঢাকা থেকে গ্রামে আসলেন। উনি বেশ খুঁজে একজনকে রাজি করালেন যিনি কয়েকটা গ্রামে ঘুরে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করবে। উনিও ভোরবেলা আসবেন, তাই আমরা রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকলাম।
আমার ফুফাতো ভাই এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। যেই কতক্ষণ আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলাম, এই সময়ের মধ্যেই বেশ কয়েকজন বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসলো। উনি শুনে সমাধান করে দিতে থাকলেন। আমি ছবি তুলতে থামলাম। এর মধ্যেই রস এসে গেল। কিছু বুঝার আগেই সেই লোক আমাদের পাশ কাটিয়ে সাইকেলের পিছনে রস নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে গেল।
শীতের সকালে কুয়াশায় দাঁড়িয়ে থাকতে প্রচণ্ড ভালো লাগে। এর মধ্যেই চা খেলাম। চা খেয়ে আমরা বাড়ির দিকে ফিরে আসলাম। এসে দেখি ভাবী খেজুরের রস দিয়ে পায়েশ তৈরি করছেন। পায়েশ তৈরি হতেই আমরা নাস্তা করতে বসলাম। খাবার খেয়ে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম। এইবারের গন্তব্য আমাদের নিজেদের বাড়ি, নাম ধোলাকান্দি। ফুফুর বাড়ি থেকে প্রায় ঘন্টাখানেকের পথ।
ধোলাকান্দি পৌছে আমরা আমাদের জমি দেখতে গেলাম। পথে একটা চিকন বাঁশের সাঁকো পড়ল। সাঁকো পার হবার আগে, সাঁকোর ছবি তুলতে লাগলাম। মডেল আব্বা। আব্বা সাঁকো পার হবার পরে, খালি সাঁকো আর খালের কয়েকটা ছবি তুলে আবারও হাটতে থাকলাম। আব্বা আমাদের জমি দেখালেন, আমিও চেষ্টা করলাম যত দূর সম্ভব মনে রাখতে।
ধোলাকান্দিতে আমাদের কোনও ঘর নেই। চাচার তোলা একটা ঘর আছে যাতে চাচাতো ভাই আর তার পরিবার থাকে। আমরা সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে, নিজেদের গাছের ডাব খেয়ে আবার আমাদের যাত্রা শুরু করলাম।
পথে আমরা ফুফুকে, ফুফাতো ভাইকে আর বড় খালাকে নামিয়ে দিয়ে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্য যাত্রা করলাম। পথে কুমিল্লায় থেমে আমরা কান্দিরপাড় থেকে রস মালাই আর ক্ষীর কিনলাম। ঢাকায় পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে গেল।