খুব ভোরে রওনা দিতে হবে, কারন আমাদের প্লান দীর্ঘ। যাত্রী আমরা চার জন, আব্বা, আম্মা, খালাম্মা, আর আমি। প্লান মত সকাল সাতটার মধ্যেই আমরা ঢাকা থেকে বের হতে পারলাম। গাড়ি চলতে লাগলো কোনও রকমের জ্যাম ছাড়াই। সকাল দশটার মধ্যে আমারা কুমিল্লা পৌছালাম। হাইওয়ে হোটেল নুরজাহানে একটা বিরতি নিলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম।
আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল মাইজদি, আমার বড় খালার বাসায়। দুপুর নাগাত আমরা মাইজদি পৌছালাম। একটু ফ্রেশ হয়ে, দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। বড় খালাম্মা ও আমাদের সাথে যেতে চাইলে, আমরা তাকেও আমাদের সাথে নিয়ে নিলাম। দুপুরের খাবার শেষ করে আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। এর পরের গন্তব্য হল নোয়াখালীর চর করমুল্লা। ওইখানে আমার দাদার কিছু জমি আছে যা বর্গা চাষি চাষ করেন। আব্বা আমাকে সেই জমি দেখাবেন।
গাড়িতে উঠা মাত্র আমার ঘুম পেয়ে গেল। যখন ঘুম ভাঙল, তখন দেখি আমরা পৌছে গেছি।
গাড়ি থেকে নেমে দেখালাম আশে পাশে পুরো পুরি গ্রামাঞ্চল। এর মধ্যে বিশাল চাষের জমি। এর মাঝে কিছু জমি আমাদের। আব্বা জমিতে নিয়ে গেলেন। সীমানা গুলো দেখিয়ে দিলেন। আমি দেখলাম, জানিনা পরে কতটুকু মনে করতে পারব।
এর মাঝে আমি পটাপট কিছু ছবি তুলে নিলাম। আমার ছবি তোলা দেখে, কয়েকজন ছোট ছেলে আমার পিছন আসতে লাগলো। আমাকে গাইড করতে লাগলো। আমি তাদের গাইড অনুযায়ী যেতে লাগলাম।
আমাদের জমি যিনি বর্গা নিয়েছেন তার নাম শহিদ ভাই। সেই শহিদ ভাই তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। আগে তার বাড়িতে যেতে একটা চিকন বাশের সাঁকো পার হতে হতো, যা আমার কাছে ভয়াবহ আতংকের ছিল। তবে সেটা এখন একটু চওড়া হয়েছে, কিন্তু এখনও তা বাশের আছে।
সাঁকোটি যেই খালেও উপরে, সেটায় মাছ ধরার কয়েকটি জাল ফেলা আছে। আর খালের উপরে মাঁচা করে তাতে থাকার ব্যবস্থাও আছে।
ঘন্টাখানেক থেকে তারপর আবার যাত্রা শুরু করলাম। এইবার গন্তব্য সাঙ্কিভাঙ্গা, ফুফুর বাড়ি। আমার খুব পছন্দের একটা জায়গা।
সাঙ্কিভাঙ্গা পৌছাতে পৌছাতে শেষ বিকাল হয়ে গেল। এর মধ্যে আম্মা বললেন তিনি নানা বাড়ি যাবেন, যা সাঙ্কিভাঙ্গা থেকে কাছে। আমি আবার কাছের একটা হাঁটে যেতে চাই। তার আম্মাদের নানা বাড়ি নামিয়ে দিয়ে আমি, আব্বা আর আমার ফুফাতো ভাই সেই হাঁটে রওনা দিলাম। হাঁটের নাম “দাশের হাঁট”। মোটামুটি বেশ বড় হাঁট। আমরা হাঁটের ভিতর দিয়ে হাটতে থাকলাম। যেহেতু আজকে হাঁটের দিন নয়, তাই ভিড় কম।
ঘন্টাখানেক থেকে আমরা রওনা দিলাম। প্রথমে আম্মা এবং খালাম্মাদের নানা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফুফুর বাড়িতে ফেরত আসব। রাত আমরা ফুফুর বাড়িতে কাটাবো।